Inspirational Story: Dreaming in Tough Realities of Taj Mahal

 Inspirational Story

Inspirational Story


পর্ব ১: অচেনা শহর

সন্ধ্যার আলো ধীরে ধীরে নিভে আসছে। ঢাকার রাস্তা এখন যেন রাত্রির শ্বসনে নতুন প্রাণ পাচ্ছে। বড়দের এক ভিন্ন জগৎ এখানে, ব্যস্ততা আর অনিশ্চয়তার মধ্যে তারা যেন নিজেদের বেঁচে থাকার মানে খুঁজে পায়। আজমলের কাঁধে ভর করে ভারী ব্যাগ, আর চোখের কোণায় এক ধরনের ক্লান্তি। সে আজ পুরো দিনজুড়ে একটা ইন্টারভিউতে ছিল, বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষ করার পর প্রথম কাজের জন্য এই শহর তার শেষ ভরসা।

ঢাকার নিউ মার্কেটের সামনে সে দাঁড়িয়ে আছে। মানুষজনের ভিড়, গাড়ির শব্দ, হর্নের আওয়াজ—সব যেন একসাথে মিশে গিয়ে আজমলের মাথার ভেতর ঝড় তুলছে। তার চোখে-মুখে হতাশার ছাপ স্পষ্ট। ইন্টারভিউটা তেমন ভালো যায়নি, যতটা আশা করেছিল।

কিন্তু এই শহর তাকে সহজে হাল ছাড়তে শেখায়নি। সে অপেক্ষায় থাকে বাসের, ধানমন্ডির দিকে যেতে হবে। হঠাৎ মোবাইলের স্ক্রিন জ্বলে ওঠে, মা ফোন করেছে। ফোনের স্ক্রিনে মায়ের নামটা দেখেই আজমলের মনে একটু শান্তি আসে, যেন সেই মুহূর্তে সে নিজের গ্রামের সরল জীবনে ফিরে গেছে।

হ্যালো, মা, কেমন আছো?
ভালোই আছি, বাবা। তুই কেমন আছিস? আজ তো ইন্টারভিউ ছিল, কেমন হলো?

আজমলের গলার স্বর একটু নরম হয়ে আসে। ঠিকমতো হলো না। ওরা তো অভিজ্ঞতা চায়, আর আমি তো নতুন। তবে আরেকটা চেষ্টা করব। দেখা যাক, কী হয়। মা একটুখানি চুপ থেকে বলে, শোন, বাবা, তুই চেষ্টা চালিয়ে যা। জীবনে কখনো হাল ছাড়িস না। আমরা সবাই তোর পাশে আছি।

মায়ের কথাগুলো আজমলের মনে এক ধরনের সান্ত্বনা এনে দেয়। সে জানে, এই শহর যেমন কঠিন, তেমনই তাকে শক্ত হতে হবে। মা যে পাশে আছে, সেই ভরসাটা সবসময়ই দরকার।

ফোন রেখে আজমল বাসে ওঠে। আজ তার মাথায় অনেক প্রশ্ন, অনেক চিন্তা। কিন্তু সবচেয়ে বড় চিন্তাটা—তাকে কি এই শহরে টিকে থাকতে হবে? নাকি ফিরে যেতে হবে সেই গ্রামের শান্ত জীবনে?

Keyword: Inspirational Story

পর্ব ২: নতুন পরিচয়

আজমল বাসে বসে বাইরে তাকিয়ে আছে। ঢাকার রাস্তার পরিচিত চেহারা তার মনে এক অদ্ভুত অনুভূতি সৃষ্টি করে। বাসটা ধানমন্ডির দিকে এগোতে থাকে। আশেপাশের আলোর ঝলকানিতে তার মনে পড়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দিনগুলোর কথা। কী আশায় শহরে এসেছিল! বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষেই আজমল অনেক স্বপ্ন দেখেছিল। একসময় মনে হয়েছিল, এই শহর তাকে সুযোগ দেবে, বড় কিছু করার, নতুন কিছু হওয়ার।

কিন্তু সময়ের সাথে সাথে বুঝতে পেরেছে, বাস্তবতা তার স্বপ্নের মতো সহজ নয়। তার আশেপাশের বন্ধুরা একে একে চাকরি পেয়ে যাচ্ছে, কিন্তু সে যেন কোথাও আটকে আছে। পড়াশোনা শেষ হয়েছে মাস ছয়েক, তবুও সে

এখনও কোনো স্থায়ী কাজ জোটাতে পারেনি।

বাস ধানমন্ডির মোড়ে থামে। আজমল ধীরে ধীরে নামতে গিয়ে হঠাৎ একটা মেয়েকে দেখে থমকে যায়। মেয়েটি পরিচিত মনে হয়। একটু খেয়াল করে বুঝতে পারে, এটা তার পুরোনো সহপাঠী, তানিয়া।

আজমল? তুমি এখানে!

তানিয়ার মুখে বিস্ময়ের ছাপ। ওর সাথে কলেজের শেষ দিনে দেখা হয়েছিল, তারপর অনেকদিন আর যোগাযোগ হয়নি।

আজমল হেসে বলে, হ্যাঁ, ঢাকাতেই আছি। তুমি কেমন আছো?

ভালো আছি! আমি এখন ধানমন্ডিতেই একটা অফিসে কাজ করি। তুমি কেমন আছো?

আজমল একটু ইতস্তত করে। এই তো, চাকরির চেষ্টা করছি। ইন্টারভিউ দিচ্ছি, দেখা যাক।

তানিয়া কিছুক্ষণ চুপ থাকে। আজমলের দিক থেকে তার চোখ সরাতে পারছে না। সে দেখে যে আজমলের চোখে ক্লান্তি আছে, সেই পুরোনো প্রাণশক্তি যেন কোথায় হারিয়ে গেছে।

আচ্ছা, তোমার এখন সময় আছে? একটা কফি খেতে চাও? তানিয়া জিজ্ঞেস করে।

আজমল ভাবল, মনের অবস্থা তো এমনিই খারাপ, তাছাড়া অনেকদিন পর পুরনো বন্ধুর সাথে দেখা, কফি খেতে আপত্তি নেই। হ্যাঁ, চলো।

ওরা ধানমন্ডির এক ছোট্ট কফি শপে ঢুকে বসে। অর্ডার দেয়ার পর তানিয়া কথা শুরু করে।

তুমি কীভাবে আছো, সত্যি বলো। অনেক দিন পর দেখা হলো, আর তোমাকে দেখে মন খারাপ লাগছে। তোমার মুখে আগের মতো হাসি নেই।

আজমল কিছুক্ষণের জন্য চুপ থাকে। এর আগে কারো সাথে নিজের হতাশা শেয়ার করেনি। আসলে, চাকরির জন্য এদিক-ওদিক ঘুরছি। আজ ইন্টারভিউ ছিল, কিন্তু ভালো হলো না। এই শহরে টিকে থাকা অনেক কঠিন হয়ে গেছে। জানি না, কী করব।

পর্ব ৩: স্বপ্নের শেষ নেই

তানিয়ার কথা শুনে আজমল কিছুটা হালকা অনুভব করে। নিজের অবস্থার প্রতি একটু ভিন্নভাবে চিন্তা করতে শুরু করে। কাজ পেতে দেরি হতে পারে, তবে এর মানে এই নয় যে তার পথ এখানেই শেষ। তানিয়া তাকে নিজের চাকরি পাওয়ার কাহিনী শোনায়—কতবার সে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল, কতবার হাল ছাড়তে চেয়েছিল, কিন্তু শেষমেশ সে সফল হয়। তার কথা শুনে আজমলের মনের মধ্যে একটা নতুন প্রেরণা জন্মায়।

কফি শেষ করে তানিয়া উঠে দাঁড়ায়। বিদায় নেওয়ার আগে সে বলে, শোনো, আমার অফিসে একটা সুযোগ আসছে। তুমি ইচ্ছা করলে সেখানে আবেদন করতে পারো। হয়তো তোমার জন্য সেটা ভালো হতে পারে।

আজমল অবাক হয়ে যায়। তুমি আমার জন্য সুপারিশ করবে?

তানিয়া হেসে বলে, অবশ্যই। তুমি আমার পুরনো বন্ধু। আমি জানি তুমি অনেক মেধাবী, শুধু একটা সুযোগের অপেক্ষা। কালই আমার অফিসে তোমার সিভি পাঠিয়ে দাও।

আজমলের মন ভরে যায়। সে মনে মনে ভাবে, শহরটা হয়তো এতটা নিষ্ঠুর নয়, যদি পাশে ভালো মানুষ থাকে। তানিয়া চলে যাওয়ার পর আজমল আবার বাসায় ফিরে আসে। কিন্তু এবার তার মন অনেক হালকা। মায়ের সাথে ফোনে কথা বলতে গিয়ে সে বলে, মা, মনে হয়, এবার কিছু একটা হবে।

পরের দিন সে তানিয়ার অফিসে সিভি পাঠায়। কয়েকদিন পর তার ডাক আসে। এবার ইন্টারভিউটা আগের চেয়ে ভালো হয়। কিছুদিনের মধ্যেই সে চাকরির প্রস্তাব পায়।

আজমলের জীবনের একটা নতুন অধ্যায় শুরু হয়। সে বুঝতে পারে, শহরের কঠিন বাস্তবতার মধ্যেও স্বপ্ন দেখতে হয়। চ্যালেঞ্জ যতই আসুক, হাল ছাড়লে চলবে না। জীবনে সাফল্যের জন্য শুধু চেষ্টা নয়, ধৈর্য আর সহানুভূতিও প্রয়োজন।

সমাপ্তি

গল্পটি এভাবেই শেষ হয়, যেখানে আজমল তার প্রথম চাকরি পেয়ে নতুন করে জীবন শুরু করে। তার ভেতরে আবার স্বপ্ন দেখা শুরু হয়, আর শহরটাও তাকে নতুনভাবে গ্রহণ করে।

তানিয়া একটু হেসে বলে, তুমি জানো, আমি প্রথম প্রথম ঠিক একই রকম পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু একটা পরামর্শ দিতে পারি—নিজেকে কখনো হারিয়ে ফেলো না। জীবনে অনেক চ্যালেঞ্জ আসবে, কিন্তু সেই চ্যালেঞ্জগুলোই আমাদের শক্তি দেয়। ধৈর্য্য ধরো, হয়তো তোমার জন্যও ভালো কিছু অপেক্ষা করছে।

তানিয়ার কথা শুনে আজমলের ভেতরে এক ধরনের সাহস জেগে ওঠে। ও ভাবে, হ্যাঁ, শহরটা যত কঠিন হোক, তাকে হার মানতে দেওয়া যাবে না। সে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে, নতুন উদ্যমে আবার চেষ্টা শুরু করবে।

This was an inspirational story

এরকম বিষয়ে আরোও জানতে এই ওয়েবসাইটের সঙ্গেই থাকুন। এই ওয়েবসাইটে প্রতিদিন নিয়মিত নতুন নতুন বিষয় আপডেট হয়। এছাড়া এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন বিষয়ে পোস্ট রয়েছে যেমন: বিভিন্ন বস্তুর আবিষ্কার ঐতিহাসিক স্থানসমূহ, ছোটদের মজার রূপকথার গল্প, সাফল্য নিয়ে বিখ্যাত মনীষীদের উক্তি এবং স্ট্যাটাস, বিখ্যাত মনীষীদের সাফল্য জীবনকাহিনী, মজার মজার জোকস ও কৌতুক, ভূতের গল্প, শিক্ষনীয় গল্প, প্রেমের কাহিনী, কাব্য উপন্যাস,শরীর সুস্থ রাখার গুরুত্বপূর্ণ ডাক্তারদের টিপস, ইসলামিক হাদিস , ইসলামের ইতিহাস ইত্যাদি। এই ওয়েবসাইটের https://www.mahadistoryworld.com/

Post a Comment

0 Comments