দুষ্টু ডাকাতের রহস্য:
একদিন, শান্ত ছোট্ট গ্রাম দিঘীপুরে, চার বন্ধু বসে গল্প করছিল। তারা ছিল রানা, লিৎ, সুমি এবং রিমু। তাদের প্রিয় সময় কাটানোর জিনিস ছিল নতুন নতুন অ্যাডভেঞ্চার খোঁজা। সেই দিনটিও ছিল বিশেষ, কারণ তারা নতুন এক রহস্যের সন্ধান পেয়েছিল।
গ্রামের প্রবেশদ্বারের কাছেই একটি পুরনো, পরিত্যক্ত বাড়ি ছিল। বাড়িটি অনেকদিন ধরে অব্যবহৃত, আর গ্রামের লোকেরা বলতো সেখানে একটা দুষ্টু ডাকাত বাস করে। ডাকাতের স্বর্ণ মুদ্রার ভাণ্ডারও নাকি সেখানে লুকানো আছে। এই গল্পগুলো শুনে তারা সিদ্ধান্ত নেয়, আজ তারা ওই বাড়িতে যাবে এবং রহস্য উদঘাটন করবে।
রানা ছিল গ্রুপের নেতা। সে বলল, চলো, আমরা সন্ধ্যার আগে আগে বাড়িতে চলে যাব। আমাদের প্রস্তুতি ভালো করে নিতে হবে। সুমি তার কাছে একটি বড় বাঁশের লাঠি নিয়ে এল, লিৎ কিছু মিষ্টি এবং ফল নিয়ে এল, আর রিমু একটা ছোট্ট কেমেরা নিয়ে আসল যাতে তারা ছবি তুলতে পারে।
বিকেল বেলা, চার বন্ধু বাড়ির দিকে রওনা হলো। বাড়িটি বিশাল ও পুরনো, জানালা এবং দরজা গুলো সব বন্ধ। তারা দরজার সামনে এসে দাঁড়াল। রানা ধীরে ধীরে দরজা ঠেলে দিল, এবং দরজাটি অল্প একটু খুলে গেল। চার বন্ধু একসাথে ভিতরে প্রবেশ করল।
ভিতরে ঢুকতেই তারা দেখতে পেল, বাড়ির মেঝে অনেকটা ভাঙা এবং ধুলাময়। আসবাবপত্রের মধ্যে কিছু পুরনো কুসুম গুলিও দেখতে পেল। তাদের আশেপাশে চারপাশে অদ্ভুত সব আওয়াজ হচ্ছিল, যা তাদের কল্পনা
শক্তি বাড়িয়ে দিল।
এখানে কিছু একটা আছে, সুমি বলল, আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
তারা বাড়ির বিভিন্ন ঘর ঘুরে দেখতে লাগল। হঠাৎ করেই, লিৎ একটি গোপন চাবির খোঁজ পেয়ে গেল। চাবিটি একটি পুরনো বাক্সের মধ্যে ছিল। তারা বাক্সটি খুলল এবং দেখল, ভিতরে কিছু পুরনো বই এবং একটি মেটাল কেস।
এটি হতে পারে ডাকাতের মুদ্রার ভাণ্ডার, রানা উত্তেজিত হয়ে বলল। তারা কেসটি খুলতেই দেখতে পেল, ভিতরে কিছু পুরনো স্বর্ণ মুদ্রা এবং একটি পাণ্ডুলিপি রয়েছে। পাণ্ডুলিপিটি খুব পুরনো এবং অপরিচিত ভাষায় লেখা।
রিমু কেমেরা দিয়ে পাণ্ডুলিপির ছবি তুলল। তারা বাড়ি ফিরে এসে গ্রামের বুদ্ধিমান বৃদ্ধের কাছে গিয়ে পাণ্ডুলিপি দেখাল। বৃদ্ধ পাণ্ডুলিপি পড়ে বলল, এটি একটি প্রাচীন ভাষায় লেখা হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে যে, ডাকাতের স্বর্ণ মুদ্রাগুলি সত্যিই এখানে ছিল, কিন্তু একে পেতে হলে এক বিশেষ রীতির অনুসরণ করতে হবে।
বৃদ্ধ তাদের রীতিটি ব্যাখ্যা করলেন। সেই রীতি অনুসারে, তারা কিছু পুরনো গান গাওয়া, এবং মাটির পাত্রে জল ঢালা করতে হবে। তারপরে মুদ্রাগুলি তাদের সামনে প্রকাশ পাবে। তারা গভীর রাতে রীতিটি অনুসরণ করল এবং সত্যিই স্বর্ণ মুদ্রাগুলি তাদের সামনে উন্মুক্ত হলো।
বিকেল বেলা, গ্রামে ফিরে এসে, তারা গ্রামবাসীদেরকে তাদের অভিযান এবং মুদ্রাগুলোর কথা জানাল। গ্রামবাসীরা তাদের সাহসিকতার প্রশংসা করল এবং বলল, তোমরা শুধু মুদ্রাগুলি খুঁজে পেয়েছো না, বরং আমাদের একসাথে আরও শক্তিশালী করেছে।
তারা তাদের অভিযান শেষে মুদ্রাগুলি গ্রামের সাহায্যে ব্যবহার করতে সাহায্য করল। গ্রামের রাস্তা, স্কুল এবং হাসপাতাল উন্নত করা হলো। সেই দিনের পর, চার বন্ধু আরও শক্তিশালী বন্ধন তৈরি করল এবং তাদের নতুন নতুন অ্যাডভেঞ্চারের জন্য প্রস্তুত থাকল।
এইভাবে, চার বন্ধুর অ্যাডভেঞ্চার সফল হলো এবং তারা বুঝতে পারলো যে সাহস ও সহযোগিতার মাধ্যমে যেকোনো রহস্যকে উন্মোচিত করা সম্ভব।
0 Comments