মজার মজারকাটুন গল্প: বিজ্ঞানী বাবু আর রোবট টুটুল

Funny cartoon story ছোটদের জন্য এটি একটি মজার কার্টুন গল্প। যা পাঠ করে শিশুরা অনেক আনন্দ ও কৌতূহলী হবে।

 মজার মজারকাটুন গল্প: বিজ্ঞানী বাবু আর রোবট টুটুল

Funny cartoon story


বিজ্ঞানী বাবু আর রোবট টুটুল

এক গ্রামে বাস করতেন এক অদ্ভুত বিজ্ঞানী। গ্রামের সবাই তাকে ডাকত বিজ্ঞানী বাবু বলে। তিনি ছিলেন ছোটখাটো, মাথায় সাদা চুল, চোখে মোটা কাচের চশমা আর সবসময় গায়ে থাকত একটা ছেঁড়া ল্যাবকোট। গ্রামের অন্যরা যখন মাঠে কাজ করত, বিজ্ঞানী বাবু তখন ব্যস্ত থাকতেন তার গবেষণাগারে।

 তার গবেষণাগারটি ছিল খুব অদ্ভুত। সেখানে ঢুকলেই দেখা যেত নানা রঙের বোতল, টুকটুকে আলো, গ্যাস বের হওয়া টিউব আর শব্দ করে ঘুরতে থাকা মেশিন।

বিজ্ঞানী বাবু সবসময় ভাবতেন কিছু একটা নতুন বানাবেন যা শিশুদের উপকারে আসবে। একদিন হঠাৎ তার মাথায় বুদ্ধি এল, তিনি বানাবেন এমন একটি রোবট যেটা শিশুদের বন্ধু হতে পারবে। নাম দিলেন টুটুল।

টুটুল তৈরি করতে বিজ্ঞানী বাবুর সময় লেগে গেল তিন মাস। দিনে ঘুমাতেন, রাতে কাজ করতেন। কখনো কখনো ভুলে যেতেন খেতেও। অবশেষে একদিন টুটুল তৈরি হয়ে গেল। সে ছিল টিনের তৈরি, তার চোখ দুটো ছিল লাল আলোয় ভরা, মুখে সবসময় হাসি, আর পেটে ছিল ছোট্ট একটা স্পিকার যার মাধ্যমে সে কথা বলত।

টুটুলের প্রথম কথাটি ছিল, আমি টুটুল, আমি এসেছি মজা করতে বিজ্ঞানী বাবু হেসে কাঁপতে কাঁপতে বললেন, তুমি এক্কেবারে দারুণ হয়েছো পরের দিনই গ্রামে ছড়িয়ে পড়ল খবর, বিজ্ঞানী বাবু বানিয়েছেন কথা বলা রোবট। শিশুদের দল ভিড় করে আসতে লাগল তার বাড়িতে। 

কেউ এসে বলত, টুটুল নাচো, কেউ বলত গান গাও, কেউ বলত চাল খাও টুটুল সব কাজ করত হাসি মুখে। 

সে নাচত প্যাঁচ প্যাঁচ করে, গান গাইত টিন টিনে গলায় আর চাল খাওয়ার জায়গায় বলত, আমি তো টিনের রোবট, আমার পেট চুম্বকে চলে একদিন এক ছেলে এসে বলল, টুটুল, তুমি কি মারামারি পারো টুটুল উত্তর দিল, আমি মারামারি করি না, আমি ভালোবাসি বন্ধুত্ব সবাই মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইল তার দিকে গ্রামে ছোটদের মধ্যে টুটুল হয়ে গেল তারকা। 

সবাই তার সঙ্গে সময় কাটাতে চাইত। সে খেলত লুকোচুরি, দিত ধাঁধার প্রশ্ন, বলত রূপকথার গল্প। টুটুলের মাথার ভিতরে ছিল এক হাজার গল্প সংরক্ষিত। কেউ বললে, গল্প শোনাও, সে সঙ্গে সঙ্গে শুরু করত। একদিন একটি ছোট মেয়ে এসে কাঁদতে কাঁদতে বলল, গল্প শোনাও, সে সঙ্গে সঙ্গে শুরু করত একদিন একটি ছোট মেয়ে এসে কাঁদতে কাঁদতে বলল, টুটুল আমার বিড়ালটা হারিয়ে গেছে টুটুল তখন চোখ বন্ধ করে বলল, বিড়ালের গলায় যদি ঘন্টার মতো কিছু বাঁধা থাকে, আমি তার শব্দ খুঁজে বের করতে পারি।

সে সঙ্গে সঙ্গে তার শরীর থেকে একটা গোল যন্ত্র বের করল যেটা শব্দ ধরতে পারত। সে গাছের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে বলল, ওখানেই শব্দ পেয়েছি

সেই জায়গা খুঁড়ে দেখা গেল ছোট বিড়ালটা একটা ঝোপের নিচে আটকে আছে। সবাই খুব খুশি হয়ে টুটুলকে বাহবা দিল।

বিজ্ঞানী বাবু দাঁড়িয়ে হাসছিলেন, তার চোখে জল ছিল আনন্দের।

তবে সব দিন এমন শান্তিপূর্ণ ছিল না। একদিন এক বাজে লোক এল গ্রামে। সে শুনেছিল বিজ্ঞানী বাবুর তৈরি রোবট নাকি অলৌকিক। সে চাইল রোবটটাকে চুরি করতে।

রাতে সে লুকিয়ে ঢুকে পড়ল গবেষণাগারে, কিন্তু টুটুল তখন ঘুমোচ্ছিল। সে যেমন দেখতে ছিল, তেমনি চালাকও ছিল। তার মধ্যে ছিল চুরি শনাক্ত করার সেন্সর। লোকটা যখন টুটুলকে ধরতে গেল, সে হঠাৎ জ্বলে উঠল এবং উচ্চস্বরে বলল, বিপদ, বিপদ, বিপদ।

বিজ্ঞানী বাবু দৌড়ে এলেন, সঙ্গে এলেন গ্রামের মানুষজন। সবাই মিলে লোকটাকে ধরে ফেলল। পরদিন বিজ্ঞানী বাবু ঘোষণা দিলেন, টুটুল এখন শুধু আমার গবেষণাগারে নয়, পুরো গ্রামের সম্পদ।

গ্রামের একটি মাঠে তৈরি হল ছোটদের জন্য এক টুটুল হাউজ, যেখানে রোবটটি প্রতিদিন শিশুদের শেখাবে গান, কবিতা, বিজ্ঞান আর মজা করা।

টুটুল প্রতিদিন বলত, শিখো, ভাবো, হাসো আর খারাপ কাজ থেকে দূরে থাকো।

গ্রামের সব শিশু তাকে ভালোবাসত। তাদের সকাল শুরু হতো টুটুলের গলায় শুনে, গুড মর্নিং বন্ধু, আর রাত শেষ হতো তার বিদায় কথায়, ঘুমাও শান্তিতে, স্বপ্ন দেখো ভালোর।

বিজ্ঞানী বাবু জানতেন, একদিন তার বয়স হবে, তিনি আর কাজ করতে পারবেন না। তাই তিনি টুটুলের মেমোরিতে রেখে গেলেন তার সব জ্ঞান, সব আবিষ্কারের নকশা আর সব গল্প।

অনেক বছর পর বিজ্ঞানী বাবু চোখ বন্ধ করলেন শান্তির ঘুমে। কিন্তু টুটুল থেকে গেল, শিশুদের বন্ধু হয়ে।

তার মিষ্টি গলা প্রতিদিন গাইত,

বন্ধু হয়ে এসেছি আমি রোবট নই, আমি তোমার সাথি

হাসো, খেলো, শেখো মন দিয়ে
ভবিষ্যতের গল্প গড়ো হাতে হাতে

এভাবেই বিজ্ঞানী বাবু আর টুটুলের গল্প ছড়িয়ে পড়ল আশেপাশের গ্রামেও। সবাই বলত, এমন রোবট আর এমন বিজ্ঞানী কল্পনার গল্পেই দেখা যায়।

কিন্তু গ্রামবাসীরা জানত, সেটা ছিল একেবারে সত্যি।

পরবর্তী অধ্যায়: টুটুল স্কুলে যায়

একদিন গ্রামের হেডমাস্টার প্রস্তাব দিলেন, টুটুলকে স্কুলে পাঠালে শিশুদের পড়াশোনায় আগ্রহ বাড়বে। বিজ্ঞানী বাবু রাজি হলেন। পরদিন থেকেই টুটুল স্কুলে যেতে লাগল।

টুটুল অংক শেখাত ছড়া দিয়ে, ইংরেজি শেখাত গান গেয়ে। বাচ্চারা খুব আনন্দ পেত। কেউ ভুল করলে সে বলত, ভুল করা মানেই শেখা শুরু।

একদিন এক ছাত্র স্কুলে আসেনি। টুটুল খোঁজ নিতে গিয়ে দেখে তার মা অসুস্থ। সে বাচ্চাটিকে সান্ত্বনা দেয়, আর বলে বন্ধুরা তোমার পাশে আছে।

এইভাবে টুটুল হয়ে ওঠে শিশুদের প্রিয় শিক্ষক আর বন্ধু। স্কুলে পড়াশোনা তখন আর ভয় নয়, বরং আনন্দের বিষয় হয়ে ওঠে।

এরকম বিষয়ে আরোও জানতে এই ওয়েবসাইটের সঙ্গেই থাকুন। এই ওয়েবসাইটে প্রতিদিন নিয়মিত নতুন নতুন বিষয় আপডেট হয়। এছাড়া এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন বিষয়ে পোস্ট রয়েছে যেমন: বিভিন্ন বস্তুর আবিষ্কার ঐতিহাসিক স্থানসমূহ, ছোটদের মজার রূপকথার গল্প, সাফল্য নিয়ে বিখ্যাত মনীষীদের উক্তি এবং স্ট্যাটাস, বিখ্যাত মনীষীদের সাফল্য জীবনকাহিনী, মজার মজার জোকস ও কৌতুক, ভূতের গল্প, শিক্ষনীয় গল্প, প্রেমের কাহিনী, কাব্য উপন্যাস,শরীর সুস্থ রাখার গুরুত্বপূর্ণ ডাক্তারদের টিপস, ইসলামিক হাদিস , ইসলামের ইতিহাস ইত্যাদি। এই ওয়েবসাইটের https://www.mahadistoryworld.com/

إرسال تعليق