Scariest Amazon forest facts
এমাজন জঙ্গল পৃথিবীর সবচেয়ে বিস্তৃত এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ রেইনফরেস্ট। এটি শুধু প্রকৃতির অপার মহিমা নয়, বরং এর ভেতরে লুকিয়ে রয়েছে ভয়ংকর এবং অদ্ভুত কিছু তথ্য। এখানে এমাজন জঙ্গল সম্পর্কে ১৫টি ভয়ংকর অদ্ভুত এবং অজানা তথ্য দেওয়া হলো:
১. বিশালতার মধ্যে লুকানো বিপদ:
এমাজন জঙ্গলের আয়তন প্রায় ৫.৫ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার। এত বিশাল একটি এলাকা যে, এটি একটি দেশ হলে এটি বিশ্বের নবম বৃহত্তম দেশ হতো। তবে এই বিশালতার মধ্যে হারিয়ে গেলে ফিরে আসার সম্ভাবনা খুব কম।
২. ক্যানডিরু ফিশ (ভ্যাম্পায়ার ফিশ):
এমাজনের নদীগুলিতে ক্যানডিরু নামে পরিচিত এক প্রকার মাছ পাওয়া যায়। এটি মানুষের শরীরের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে, বিশেষ করে প্রস্রাবের প্রবাহ লক্ষ্য করে। এটি ছোট হলেও ভয়ংকর যন্ত্রণাদায়ক এবং চিকিৎসার জন্য অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হয়।
৩. পিরানহা মাছের আক্রমণ:
এমাজনের নদীতে পিরানহা মাছ রয়েছে, যা শক্ত দাঁতের জন্য পরিচিত। যদিও পিরানহা সাধারণত মানুষের আক্রমণ করে না, তীব্র ক্ষুধার্ত অবস্থায় এরা দল বেঁধে শিকার করে এবং কয়েক মিনিটের মধ্যে প্রাণীকে সম্পূর্ণ খেয়ে ফেলতে পারে।
৪. বন্যার চরম বিপদ:
এমাজন নদীর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলোতে বছরে কয়েকবার প্রচণ্ড বন্যা হয়। বর্ষাকালে নদী প্রায় ৩০ ফুট পর্যন্ত ফুলে ওঠে, তখন জঙ্গলের অনেক অংশ পানির নিচে চলে যায়। এ সময়ে বন্যপ্রাণীর বসতি ধ্বংস হয়ে যায় এবং নদীতে ভেসে যাওয়া গাছপালা সবকিছু বদলে দেয়।
৫. জাগুয়ারের শিকার-কৌশল:
এমাজন জঙ্গলের জাগুয়াররা তাদের শিকার করার কৌশল দিয়ে বিখ্যাত। তারা অনেক সময় গাছে লুকিয়ে থাকে এবং এক লাফে শিকারকে আক্রমণ করে। জাগুয়ারের কামড় এত শক্তিশালী যে, এটি সহজেই একটি প্রাণীর খুলি ভেদ করতে পারে।
৬. সবচেয়ে বিষাক্ত সাপ:
এমাজনের মধ্যে পাওয়া যায় বিশ্বের অন্যতম বিষাক্ত সাপ, যার নাম হলো ফার্দ ল্যান্সহেড (Fer-de-Lance)। এ সাপের কামড় থেকে
মৃত্যুর হার খুবই বেশি এবং এর বিষ দ্রুত রক্ত সঞ্চালন বন্ধ করে দেয়।
৭. মাটির নিচে নদী:
এমাজন জঙ্গলের নিচে একটি রহস্যময় মাটির নিচে নদী রয়েছে, যার নাম হামজা। এটি এমাজন নদীর নিচ দিয়ে বয়ে যায় এবং অনেক বিজ্ঞানী একে অদৃশ্য নদী বলে অভিহিত করেছেন।
৮. বুলেট পিঁপড়া:
এমাজন জঙ্গলে বুলেট পিঁপড়া পাওয়া যায়, যা সবচেয়ে শক্তিশালী এবং ব্যথাদায়ক কামড় দেয়। এ পিঁপড়ার কামড় এমন অনুভূতি তৈরি করে যে, যেন গুলি করা হয়েছে। তাদের বিষ এত শক্তিশালী যে এটি প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে অসহ্য যন্ত্রণা দিতে পারে।
৯. পৃথিবীর ২০% অক্সিজেন উৎপাদন:
এমাজন রেইনফরেস্টকে পৃথিবীর ফুসফুস বলা হয়, কারণ এটি বিশ্বের মোট অক্সিজেনের প্রায় ২০% উৎপাদন করে। তবে সাম্প্রতিক অরণ্যনিধন প্রকৃতপক্ষে এই হার কমিয়ে দিচ্ছে।
১০. মানুষখেকো মাকড়সা:
এমাজন জঙ্গলে পাওয়া যায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় মাকড়সা, যাকে গোলিয়াথ বার্ড-ইটার বলা হয়। এর পা প্রায় ৩০ সেন্টিমিটার লম্বা এবং এটি পাখি, ইঁদুরসহ অন্যান্য ছোট প্রাণী শিকার করে। যদিও মানুষের জন্য তা বিপজ্জনক নয়, তবে ভয়াবহ দেখতে।
১১. ভয়ংকর বিষাক্ত ডার্ট ফ্রগ:
এমাজনের বিষাক্ত ডার্ট ফ্রগদের শরীরে এত বিষ থাকে যে, তারা একটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মৃত্যুর জন্য যথেষ্ট। তাদের চামড়া থেকে নির্গত বিষ সহজেই অন্য প্রাণীদের পক্ষাঘাতগ্রস্ত করতে পারে।
১২. বায়োমাসের কেন্দ্রীভূত স্থল:
এমাজন জঙ্গল পৃথিবীর সর্বাধিক জীববৈচিত্র্যের স্থান, যেখানে পৃথিবীর ১০% প্রজাতি বাস করে। কিন্তু এই জীববৈচিত্র্যের মধ্যে অনেক অজানা ও ভয়ংকর প্রাণী রয়েছে যা এখনও মানুষের অজানা।
১৩. জলবায়ুর উপর প্রভাব:
এমাজন জঙ্গল শুধু প্রাণীজগতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, এটি জলবায়ুর উপর বড় প্রভাব ফেলে। এখান থেকে নিঃসৃত জলীয় বাষ্প বৃষ্টি উৎপাদন করে, যা দক্ষিণ আমেরিকার অন্যান্য দেশগুলোরও বৃষ্টিপাতকে নিয়ন্ত্রণ করে।
১৪. বাড়ছে অরণ্যনিধন:
বছর বছর এমাজন জঙ্গল ধ্বংস হচ্ছে এবং এটি পৃথিবীর বাস্তুতন্ত্রের জন্য ভয়ংকর হুমকি। প্রতি মিনিটে ১৫০ একরেরও বেশি বনভূমি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, যা জলবায়ু পরিবর্তনকে ত্বরান্বিত করছে।
১৫. অনুসন্ধানকারী মানুষদের হারিয়ে যাওয়া:
এমাজনের অগভীর ও ঘন বনভূমিতে বহুবার অনুসন্ধানকারী এবং অভিযাত্রী দল হারিয়ে গিয়েছে। এমনকি আজও অনেক অঞ্চল রয়েছে যেখানে মানুষ প্রবেশ করতে সাহস পায় না, কারণ সেখানকার দুর্গম পরিবেশ ও ভয়ংকর বন্যপ্রাণী তাদের জন্য মারাত্মক হতে পারে।
এই ১৫টি তথ্য এমাজন জঙ্গলের ভয়ংকর ও অদ্ভুত রহস্যকে তুলে ধরে। যদিও এটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ, তবে এর ভেতর লুকিয়ে রয়েছে ভয়ানক বিপদ।
0 Comments