মজার কৌতুক
এক গ্রামে ছিল রমেশ আর শ্যামল নামের দুই বন্ধু। তাদের মধ্যে ছিল এক অদ্ভুত প্রতিযোগিতা—কে কত বেশি বুদ্ধিমান! প্রতিদিন সকালে তারা নিজেদের বুদ্ধির ঝলকানি দেখানোর নতুন নতুন কৌশল বের করত। একদিন রমেশের মাথায় এল এক ধাপ্পাবাজির বুদ্ধি।
রমেশ ভাবল, আজ শ্যামলকে এমন এক ধোঁকা দেব, যে সে পুরো গ্রামকে হাসাবে! তাই সে ঠিক করল, একটা কুকুর ধরে সেটাকে মানুষের মতো তৈরি করবে এবং শ্যামলকে দেখিয়ে বলবে, দেখ শ্যামল, আমি একটা মানুষ তৈরি করেছি!
রমেশ কুকুরটাকে খুব সুন্দরভাবে সাজিয়ে ফেলল—মাথায় টুপি, গায়ে শার্ট, পায়ে প্যান্ট। এমনকি একটা সানগ্লাসও পরিয়ে দিল। এবার সময় হল শ্যামলকে দেখানোর।
শ্যামল যখন রমেশের বাড়িতে এল, রমেশ বলল, দেখ শ্যামল, আমি এক নতুন বন্ধু বানিয়েছি।
শ্যামল বেশ অবাক হয়ে বলল, ওহ! এটা তো মানুষ নয়, কুকুর।
রমেশ গম্ভীরভাবে বলল, না না, তুমি ভুল দেখছ। এটা কিন্তু একটা সত্যিকারের মানুষ। একটু কাছ থেকে দেখ, একদম মানুষের মতো না?
শ্যামল বুঝতে পারল রমেশ এক মজার ধাপ্পাবাজি করছে, কিন্তু সে নিজে এক চরম বুদ্ধির জবাব ঠিক করে ফেলল। সে বলল, ঠিক আছে, যেহেতু তোমার বানানো বন্ধু মানুষ, তাই আমি তার সঙ্গে কথা বলব।
শ্যামল কুকুরটির দিকে ঘুরে বলল, হ্যালো মিস্টার, কেমন আছেন?
কুকুরটি তো কিছুই বলল না, চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকল। শ্যামল আবার বলল, বুঝতে পারছি, আপনি হয়তো একটু লাজুক মানুষ। ঠিক আছে, এবার আসি। কিন্তু এক কাজ করো, রমেশ, তোমার বন্ধুকে শিখিয়ে দাও, কীভাবে সঠিকভাবে কথা বলতে হয়!
রমেশ হেসে বলল, আরে, এই বুদ্ধি তো আমারও মাথায় আসেনি। ঠিক আছে, কালকে আমি তাকে কথাও বলাতে শিখিয়ে দেব।
দুইজনই মজা করে হাসতে লাগল। রমেশ ভাবল, যদি কালকেও শ্যামলকে আবার বোকা বানাতে পারি, তাহলে পুরো গ্রাম আমার বুদ্ধির গল্প করবে।
পরের দিন রমেশ নতুন কৌশল নিয়ে এল। এবার সে কুকুরটিকে নিয়ে শ্যামলের বাড়িতে গেল। গিয়ে বলল, আজ তোকে দেখাব আমার বানানো মানুষ কীভাবে কথা বলে!
শ্যামল জিজ্ঞেস করল, তাহলে দেখাও।
রমেশ বলল, ঠিক আছে, শোন, হ্যালো মিস্টার, আপনি কেমন আছেন?
কুকুরটা এবারও কিছু বলল না। তখন শ্যামল একটা চকচকে আপেল বের করে বলল, আচ্ছা, এই কুকুরটা যদি মানুষ হয়, তবে সে নিশ্চয়ই আপেল খেতে ভালোবাসবে।
রমেশ ঘাবড়ে গেল। সে জানত, কুকুর আপেল খায় না। শ্যামল মজা করে বলল, কেন, তোমার বানানো মানুষ কি এবার কিছু বলবে না?
রমেশ এবার হেসে বলল, আচ্ছা, আমি মেনে নিচ্ছি—এটা কুকুরই!
তবে শ্যামল হেসে বলল, আরে ধুর! তুমি এত বুদ্ধিমান হয়ে কুকুরকে মানুষ বানানোর চেষ্টা করলে, কিন্তু আসল বুদ্ধিটা হলো, কুকুরকে কুকুরই রাখতে শেখা!
এভাবে রমেশ আর শ্যামল প্রতিদিন নতুন নতুন মজার বুদ্ধি নিয়ে ধোঁকা দিতে থাকল, আর গ্রামবাসীরা তাদের এই হাসির গল্প শুনে রোজ হাসতে থাকত।
গল্পের শেষে রমেশ আর শ্যামল বুঝে গেল, কখনও কখনও সেরা বুদ্ধিমানের কাজ হলো একে অপরকে মজা করে বোকা বানানো, আর সেই মজার আনন্দেই সত্যিকারের বুদ্ধির বিকাশ হয়।
0 Comments