The poorest country in the world
পৃথিবীর সবচেয়ে গরিব দেশগুলির তালিকা সাধারণত মাথাপিছু আয় (GDP per capita), মানব উন্নয়ন সূচক (HDI), এবং অর্থনৈতিক অসাম্যর মতো উপাদানের ওপর ভিত্তি করে করা হয়। নিম্নে পৃথিবীর সবচেয়ে দরিদ্র ১৫টি দেশের একটি তালিকা ও সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেওয়া হলো:
১. বুরুন্ডি
মাথাপিছু আয়: প্রায় ২৩৬ মার্কিন ডলার (২০২3)
বুরুন্ডি আফ্রিকার পূর্ব অংশে অবস্থিত। দেশটির প্রধান সমস্যা হল স্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্নীতি, এবং বেকারত্ব। কৃষির ওপর অত্যন্ত নির্ভরশীল বুরুন্ডিতে উন্নয়নের অভাব রয়েছে।
২. দক্ষিণ সুদান
মাথাপিছু আয়: প্রায় ৩০০ মার্কিন ডলার
২০১১ সালে স্বাধীনতা লাভ করলেও, দক্ষিণ সুদানে গৃহযুদ্ধ ও রাজনৈতিক অস্থিরতা চলমান। এখানকার জনগণের বেশিরভাগই দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে, এবং দেশটি তেল রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল।
৩. মালাউই
মাথাপিছু আয়: প্রায় ৩৮৭ মার্কিন ডলার
মালাউই মূলত কৃষি নির্ভর দেশ। দেশটিতে প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ থাকলেও, দুর্বল অবকাঠামো, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার অভাব রয়েছে। দুর্ভিক্ষ ও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা দেশটির প্রধান চ্যালেঞ্জ।
৪. মোজাম্বিক
মাথাপিছু আয়: প্রায় ৪৭৩ মার্কিন ডলার
মোজাম্বিক আফ্রিকার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত। দেশটিতে একসময়ে গৃহযুদ্ধ চলেছিল, এবং বর্তমানে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সত্ত্বেও অনেক মানুষ দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করছে।
৫. সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক (CAR)
মাথাপিছু আয়: প্রায় ৪৮৫ মার্কিন ডলার
CAR এর প্রধান সমস্যা হল গৃহযুদ্ধ, অবকাঠামোর অভাব, এবং দারিদ্র্য। জাতিগত সংঘাত এবং রাজনৈতিক দুর্নীতি দেশের উন্নয়নে বড় বাধা।
৬. নাইজার
মাথাপিছু আয়: প্রায় ৫১০ মার্কিন ডলার নাইজারের অর্থনীতি মূলত কৃষির ওপর নির্ভরশীল, এবং দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে দারিদ্র্য, খরা, ও ক্ষুধা বিরাজমান। শিক্ষার সুযোগও খুব সীমিত।
৭. কঙ্গো (ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো)
মাথাপিছু আয়: প্রায় ৫৪০ মার্কিন ডলার
প্রাকৃতিক সম্পদের প্রাচুর্য থাকা সত্ত্বেও, রাজনৈতিক দুর্নীতি এবং সশস্ত্র সংঘাত কঙ্গোতে প্রধান চ্যালেঞ্জ। এখানকার জনগণের বিশাল অংশ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে।
Keyword: The poorest country in the world
The poorest country in the world
৮. লিবেরিয়া
মাথাপিছু আয়: প্রায় ৬৫০ মার্কিন ডলার
গৃহযুদ্ধের পর লিবেরিয়া অর্থনৈতিকভাবে ধ্বংসপ্রাপ্ত। প্রাকৃতিক সম্পদ থাকা সত্ত্বেও দুর্বল অবকাঠামো এবং শিক্ষার অভাব দেশটির উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করছে।
৯. মাদাগাস্কার
মাথাপিছু আয়: প্রায় ৭০০ মার্কিন ডলার
মাদাগাস্কার মূলত কৃষি এবং পর্যটন নির্ভর। তবে, রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্নীতি এবং অবকাঠামোর অভাব দেশটির উন্নয়নকে সীমিত করেছে।
১০. গিনি
মাথাপিছু আয়: প্রায় ৭২০ মার্কিন ডলার
গিনিতে প্রচুর খনিজ সম্পদ থাকলেও, দেশের বেশিরভাগ জনগণ দরিদ্র। দুর্নীতি এবং স্বল্প আয়ের কারণে গিনির অর্থনীতি উন্নয়নশীল হতে পারছে না।
১১. ইথিওপিয়া
মাথাপিছু আয়: প্রায় ৮৫০ মার্কিন ডলার ইথিওপিয়ার অর্থনীতি মূলত কৃষির ওপর নির্ভরশীল। বন্যা, খরা, এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দেশটির উন্নয়ন বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে।
১২. সিয়েরা লিওন
মাথাপিছু আয়: প্রায় ৮৯৫ মার্কিন ডলার
সিয়েরা লিওনে দীর্ঘমেয়াদী গৃহযুদ্ধ এবং ইবোলা মহামারির প্রভাব দেশের অর্থনীতিকে স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। দারিদ্র্য এবং দুর্নীতি এখানকার প্রধান সমস্যা।
১৩. গিনি বিসাউ
মাথাপিছু আয়: প্রায় ৯৫০ মার্কিন ডলার
গিনি বিসাউয়ের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, দুর্বল স্বাস্থ্যসেবা এবং অবকাঠামোর অভাব দেশটিকে অত্যন্ত দারিদ্র্যের মধ্যে রেখেছে।
১৪. টোগো
মাথাপিছু আয়: প্রায় ১,০৩০ মার্কিন ডলার
টোগোর অর্থনীতি কৃষি এবং রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল। তবে, দুর্নীতি এবং বেকারত্ব দারিদ্র্য বাড়িয়ে তুলেছে।
১৫. হাইতি
মাথাপিছু আয়: প্রায় ১,২০০ মার্কিন ডলার
ল্যাটিন আমেরিকার দেশ হাইতি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, দুর্নীতি এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার শিকার। অনেকাংশে বিদেশি সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল।
এই দেশগুলির বেশিরভাগই আফ্রিকাতে অবস্থিত, যেখানে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, দুর্নীতি, এবং অবকাঠামোর অভাব প্রধান উন্নয়নগত চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত হয়। এগুলির অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য আন্তর্জাতিক সাহায্য এবং অভ্যন্তরীণ সংস্কার প্রয়োজন।
0 Comments