স্বপ্নের পথে সংগ্রামী যাত্রা: এপিজে আবদুল কালামের জীবনের কাহিনি

গরিব থেকে বিশ্ব বিখ্যাত এমনিতে হওয়া যায় না। বিশ্ব বিখ্যাত হওয়ার পিছনে লুকিয়ে থাকে অনেক কষ্টের গল্প।

 গরিব থেকে বিশ্ব বিখ্যাত এমনিতে হওয়া যায় না। বিশ্ব বিখ্যাত হওয়ার পিছনে লুকিয়ে থাকে অনেক কষ্টের গল্প। অনেক ঘাত প্রতিঘাতকে এড়িয়ে তবে সাফল্য অর্জন করা যায়। এরকমই অনেক পরিশ্রম করে বিশ্ব বিখ্যাত হয়েছিলেন এপিজে আবদুল কালাম। চলুন তিনার কষ্টের জীবন কাহিনীটি নিচে থেকে জেনে আসি:

এপিজে আবদুল কালাম (পূর্ণ নাম: আবুল পাকির জয়নুলআবিদীন আবদুল কালাম) ছিলেন ভারতের একজন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী এবং ২০০২ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত ভারতের ১১ তম রাষ্ট্রপতি। তার জীবন কাহিনী অসংখ্য মানুষের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।

শৈশব ও কষ্টের জীবন:

এপিজে আবদুল কালাম ১৯৩১ সালের ১৫ অক্টোবর তামিলনাড়ুর রামেশ্বরমে একটি দরিদ্র মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা, জয়নুলাবেদিন, ছিলেন একজন নৌকার মালিক এবং মসজিদের ইমাম। মা, আশিয়াম্মা, ছিলেন একজন গৃহিণী। কালামের পরিবার খুবই দরিদ্র ছিল, তাই শৈশবে তাকে অর্থ উপার্জনের জন্য পত্রিকা বিক্রি করতে হয়েছিল।

শিক্ষার প্রতি আগ্রহ:

অভাব-অনটন সত্ত্বেও, কালামের পড়াশোনার প্রতি গভীর আগ্রহ ছিল। রামেশ্বরম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনি পড়াশোনা শুরু করেন এবং পরে স্কলারশিপ পেয়ে সেন্ট জোসেফ কলেজে ভর্তি হন। তিনি পদার্থবিজ্ঞান ও গণিতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন এবং পরবর্তীতে মাদ্রাজ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (MIT) থেকে এরোনটিকাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিগ্রি অর্জন করেন।

পেশাগত জীবন ও সংগ্রাম:

শিক্ষাজীবন শেষে, তিনি ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থায় (DRDO) যোগ দেন। পরবর্তীতে তিনি ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থায় (ISRO) যোগ দেন, যেখানে তিনি ভারতের প্রথম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ যান

(SLV-3) তৈরিতে নেতৃত্ব দেন। তার নেতৃত্বে ভারত পরমাণু শক্তিতে সমৃদ্ধ হয় এবং তিনি "মিসাইল ম্যান" নামে খ্যাতি অর্জন করেন।

রাষ্ট্রপতি হিসেবে জীবন:

২০০২ সালে, এপিজে আবদুল কালাম ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। রাষ্ট্রপতি হিসেবে, তিনি বিজ্ঞান ও শিক্ষার প্রসারে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন এবং দেশের যুব সমাজকে স্বপ্ন দেখতে ও তা বাস্তবায়নে উদ্বুদ্ধ করেন। রাষ্ট্রপতি পদে তিনি জনপ্রিয় ছিলেন এবং সর্বদা মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন।

জীবন দর্শন:

এপিজে আবদুল কালাম বিশ্বাস করতেন যে কঠোর পরিশ্রম, অধ্যবসায়, এবং দৃঢ় সংকল্পের মাধ্যমে জীবনে যে কোনো কিছু অর্জন করা সম্ভব। তার জীবন সংগ্রাম এবং সাফল্য প্রমাণ করে যে সীমাবদ্ধতা থাকলেও মানুষের ইচ্ছাশক্তি ও পরিশ্রম জীবনের পথকে আলোকিত করতে পারে।

মৃত্যু:

২০১৫ সালের ২৭ জুলাই মেঘালয়ের শিলংয়ে একটি বক্তৃতা দেওয়ার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। তার জীবন ও কাজ আজও লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।

এপিজে আবদুল কালামের জীবনের কষ্ট, সংগ্রাম, এবং অর্জন আমাদের শেখায় যে দৃঢ় সংকল্প ও পরিশ্রমের মাধ্যমে জীবনে বড় কিছু অর্জন করা সম্ভব।

এরকম আরো বিভিন্ন মনীষীদের জীবনী জানতে এই ওয়েবসাইটির সঙ্গে থাকুন। এই ওয়েব সাইটে নিয়মিত পোস্ট আপডেট হয়। ওয়েবসাইটির লিঙ্ক https://www.mahadistoryworld.com/


Post a Comment